Saturday, August 31, 2013

বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ

লুপ্ত ভাষার ইতিহাস বিচার করে পন্ডিতগন তাদের কয়েকটি বিশেষ শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। প্রতিটি শ্রেণীতে রয়েছে অনেকগুলো ভাষা-বংশ বা ভাষা গোষ্ঠী। আনুমানিক ৫০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে মধ্য এশিয়ায় ইন্দো ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছিল বলে পন্ডিতগন মনে করেন। তাদের বলা হয় 'আর্য' বা (Noble)।

আনুমানিক ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকেই আর্যরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে শুরু করে। তাদের সাথে ছিল শক্তিশালী বৈদিক ভাষা আর দেবগীতিমূলক সাহিত্য। ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় অধিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতি আত্মসাৎ করে আর্য ভাষার একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু স্থানীয় মানুষের জড়তাপূর্ণ উচ্চারণের ফলে ধীরে ধীরে এ ভাষার তৎসম শব্দের কিঞ্চিৎ পরিবর্তন হয় ফলে ভাবগাম্ভির্য হারিয়ে নতুন এক ভাষার পরিবর্তিত হয়, যার নাম হয় পালি ভাষা।

পালি এবং স্থানীয় অনার্যদের ভাষার মিশ্রনে তৈরি হয় বোধগম্য প্রাকৃত ভাষা। এই প্রাকৃত ভাষা সময়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং লোকমুখে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হতে থাকে। এমনই কয়েকটি বিকৃত ভাষা হল মাগধী প্রাকৃত, মাহারাষ্ট্রি প্রাকৃত, শৌরসেনি প্রাকৃত, পৈশাচি প্রাকৃত ইত্যাদি।

 স্যার জর্জ গ্রিয়ার্সন এর মতে মাগধী প্রাকৃত থেকে পরবর্তিকালে আরো বিকৃত হয়ে অপভ্রংশ তৈরি হয় যার নাম 'অবহটঠ', বিবর্তনের মাধ্যমে এ থেকেই পরে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়।

ড মুহম্মদ শহিদুল্লাহর মতে মাগধী প্রাকৃতের প্রাচ্যতর রূপ গৌড়িয় প্রাকৃত থেকে বাংলার উৎপত্তি।

No comments:

Post a Comment